বৃন্দাবন সরকারি কলেজের অন্যতম পুরাতন ও ঐতিহ্যবাহী বিভাগ বাংলা। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ১৯৯৮-৯৯ শিক্ষাবর্ষে অনার্স কোর্স চালুর মাধ্যমে বিভাগের পাঠদান কাজের সূচনা হয় এবং ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষে মাস্টার্স কোর্স চালু হলে বিভাগটি পাঠদান কার্যক্রমের দিকদিয়ে অনেকটা পূর্ণতা লাভ করে। শাহ এ এম এস কিবরিয়া ভবনের তৃতীয় তলায় অবস্থিত এই বিভাগে বর্তমান শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ছয়শত। প্রতিবছর তারা অনার্স এবং মাস্টার্স পরীক্ষায় ভালো ফল লাভ করে। প্রাতিষ্ঠানিক অধ্যায়ন শেষে অনেক শিক্ষার্থী বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে যেমন নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে জায়গা করে নিয়েছে, তেমনি নিজ উদ্যোগেও কেউ কেউ কর্মসংস্থানের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হয়েছে। সাবেক শিক্ষার্থীদের অনেকেই বাংলা বিভাগের অ্যালামনাই সংগঠনের সাথে যুক্ত হয়ে বিভিন্ন সেবামূলক কাজে নিজেদের নিয়োজিত রেখেছে। বিভাগ প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখানে পাঠদান কার্যক্রম এবং প্রাতিষ্ঠানিক দায়িত্ব পালন করেছেন অনেক স্বনামধন্য শিক্ষক। অধ্যাপক নৃপেন্দ্র লাল দাশ, নন্দলাল শর্মা, অরুণ কুমার শুক্লবৈদ্য, জাহান আরা খাতুন, স্বপন কুমার দাস, সেলিনা আক্তার, সাবিহা মমতাজ, মাহবুবা নাছরিন, পান্না বসু, শফিকুল ইসলাম, আবুল বাশার, মনিরুল ইসলাম, মুরাদুজ্জামান, শিপা যাদব প্রমুখ। বিভাগে অধ্যাপক পদ সৃজনের পর ২০১৩ সালে এতে প্রথম যোগদান করেন অধ্যাপক দেওয়ান জামাল উদ্দিন চৌধুরী। মধ্যে বছরখানেক কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্বপালন শেষে তিনি পুনরায় বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব দক্ষতার সাথে পালন করে যাচ্ছেন। ড. মোহাম্মদ আজহারুল ইসলাম প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন ২০০৬ সালে। তিনি বর্তমানে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন। তরুণ কর্মকর্তা মিলি আক্তার তমা এবং মো. আসাদ হোসেন প্রভাষক হিসেবে তাদের দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করছেন। বিভাগের শ্রেণিকক্ষ মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরসহ সুসজ্জিত, প্রত্যেক শিক্ষকের জন্য রয়েছে ল্যাপটপ কম্পিউটার। সার্বক্ষণিক ইন্টারনেট সংযোগ, ল্যান্ডফোন সংযোগ এবং শ্রেণিকক্ষসহ পুরো বিভাগ সিসি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা বছরব্যাপী সহশিক্ষা কার্যক্রমের সাথে জড়িত থাকে। সেমিনার, শিক্ষাসফর, খেলাধুলা, রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানান সুকুমারবৃত্তি চর্চার কার্যক্রম বিভাগের তত্তাবধানে অনুষ্ঠিত হয়। বিভাগ থেকে প্রকাশিত ‘নাটাই’, ‘রোদের আনন্দ মাখা দিন’, ‘রক্তকমল’ ম্যাগাজিন ও দেওয়াল পত্রিকা ছাড়াও বিভিন্ন অনলাইন গ্রুপে শিক্ষার্থীরা তাদের সাহিত্যচর্চার সুযোগ পেয়ে থাকে। কলেজের বটমূলে সাড়ম্বরে বৈশাখ উদ্যাপনের সূচনা হয় বাংলা বিভাগের হাত ধরে। পহেলা বসন্তে ক্যাম্পাসে উৎসবের আনন্দ ছড়িয়ে দেওয়ার কাজটিও বাংলা বিভাগই করে থাকে। শীত কিংবা বর্ষার উৎসবেও সাড়া দেয় আবহমান বাঙালি সংস্কৃতির ধারক বাংলা বিভাগ। সাহিত্যের জ্ঞান আহরণ এবং বিতরণের কাজটি আনন্দের সাথে সম্পন্ন করে বাংলা বিভাগ শিক্ষার্থীদের বিকশিত করার প্রচেষ্টায় সর্বদা নিয়োজিত রয়েছে। এর অন্তরে রয়েছে সে মহৎ বাণী, ‘সবার উপরে মানুষ’